(এবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ ২৪.কম ): নেদারল্যান্ডসে ৭ম আন্তর্জাতিক হর্টিকালচার এক্সিবিশনে (ফ্লোরিয়েড এক্সপো-২০২২) সরকারিভাবে প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করছে বাংলাদেশ। ছয় মাসব্যাপী এই এক্সপো শুরু হয়েছে গত ১৪ এপ্রিল। এর উদ্বোধন করা হয় ১৩ এপ্রিল। এই এক্সপো চলবে আগামী ৯ অক্টোবর পর্যন্ত। বাংলাদেশসহ ৩২টি দেশ অফিসিয়াল পার্টনার হিসেবে প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করছে। এছাড়া অন্যান্য প্যাভিলিয়নের মধ্যে রয়েছে ন্যাশনাল ৬২টি, গ্রিন হাউজ ১৬টি, হাইটেক গ্রিন হাউজ ১৫টি, এক্সপিরিয়েন্স গ্রিন হাউজ ৬২টি, নার্সারি ৯০টি, পার্টনার্স ২৫টি, প্যারেনিয়াল ১২টি, ফ্লাওয়ার বালব ১২টি, অ্যাক্সোটিক প্লান্ট ৫টি ও ডাইভারস ১৫টি। আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক্সপোতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ বিষয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত দেশের কাতারে শামিল হতে জোরেশোরে অগ্রসর হচ্ছে। আমরা বর্তমানে কৃষিকে বাণিজ্যিক ও লাভজনক করতে কাজ করছি। এ এক্সপোতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে কৃষিক্ষেত্রে দেশের অর্জিত বিস্ময়কর সাফল্য ও কৃষিপণ্যের রপ্তানি সম্ভাবনা বিশ্ব দরবারে তুলে ধরা সম্ভব হবে। মন্ত্রী জানান, সরকারের পাশাপাশি দেশের এসিআই, প্রাণ গ্রুপ, হাশেম ফুডস, স্কয়ার ফুডস, গ্লোবপ্যাক ফুডস, বাংলাদেশ ফ্রুটস, ভেজিটেবলস অ্যান্ড আ্যালাইড প্রডাক্টস এক্সপোর্টাস এসোসিয়েশনসহ প্রায় ২০টির মতো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এতে অংশগ্রহণ করছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ নিজ খরচে যাতায়াতসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে এক্সপোতে অংশগ্রহণ করছে। মন্ত্রী বলেন, এক্সপোতে প্যাভিলিয়ন প্রস্তুত, আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন, বাংলাদেশ দিবস উদযাপন, সমাপনী অনুষ্ঠান, প্যাভিলিয়ন পরিচালনাসহ সফলভাবে এক্সপোতে অংশগ্রহণের জন্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিনিধিদের নিয়ে প্রতিনিধিদল গঠন করা হয়েছে। প্রতিনিধিদলের সদস্যরা এক্সপো চলাকালীন (৬ মাস বা ১৮০ দিন) পর্যায়ক্রমে প্যাভিলিয়নে/নেদারল্যান্ডসে এক্সপোতে গমণ করবেন এবং বিজনেস নেটওয়ার্কিং, দর্শনার্থীদের অভ্যর্থনা ও ব্রিফিং, প্যাভিলিয়ন ম্যানেজমেন্টসহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি, নেদারল্যান্ডসে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি আগ্রহী শিক্ষার্থীদের প্যাভিলিয়নে কাজে লাগাতে নেদারল্যান্ডসের দূতাবাস কাজ করে যাচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, এক্সপোতে বাংলাদেশ নিজেদের উদ্ভাবন ও গ্রিন সল্যুশনস বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরছে। দেশের মানসম্মত নিরাপদ শাকসবজি, ফলমূল ও ফুলের এবং কৃষিপণ্যের প্রদর্শনীর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পাশাপাশি, স্টলে দেশের কৃষির বিভিন্ন সাফল্যের উপর নির্মিত ১৩টি ডিজিটাল ডিসপ্লে প্রদর্শন করা হচ্ছে। এই এক্সপোতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের মাধ্যমে ইন্টারন্যাশনাল এসোসিয়েশন অব হর্টিকালচার প্রডিউর্সাস (এআইপিএইচ)’র মত একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্য হওয়ার সুযোগ বাংলাদেশের তৈরি হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্যাভেলিয়নে প্রতিদিন প্রায় ৭০০-১,২০০ দর্শনার্থী পরিদর্শন করছে। আন্তর্জাতিক হর্টিকালচার এক্সিবিশন প্রতি দশকে একবার নেদারল্যান্ডসে অনুষ্ঠিত হয়। এবার বসেছে এক্সপোর ৭ম আসর। এবারের প্রতিপাদ্য হলো ‘সবুজ নগর গড়ে তোলা’ (মৎড়রিহম মৎববহ পরঃরবং)। এবারের এক্সপোটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ ফ্লোরিয়েড এক্সপোর হিসেবে ২০৫০ সালের মধ্যে পৃথিবীর শতকরা ৬৮ ভাগ মানুষ নগরে বাস করবে। এবারের এক্সপোটি নেদারল্যান্ডসের আলমেয়ার শহরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রায় ৬০ হেক্টর বা ১৫০ একর জমি নিয়ে এই এক্সপোর আয়োজন। এক্সপোর ১০১ নম্বর প্লটটি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশকে। গুরুত্বের দিক দিয়ে আয়োজক দেশ ডাচ প্যাভিলিয়নের পাশের প্যাভিলিয়নটি বাংলাদেশের। ১,০০০ বর্গমিটারের প্যাভিলিয়নটি জাতীয় ফুল শাপলার ১৮টি পাপড়ির উপর দাঁড়ানো একটি প্রাকৃতিক প্যাভিলিয়ন যার বেশিরভাগ পাটের তৈরি পণ্য ও পাটের আঁশ দিয়ে তৈরি।