,

মধুমতী নদীর উপর স্বপ্নের কালনা সেতুর নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে

এবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ ২৪.কম : দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নড়াইলবাসীর স্বপ্নের কালনা সেতুর নির্মান কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। মধুমতী নদীতে নির্মাণাধীন দৃষ্টিনন্দন এ সেতুটি হবে ছয় লেনের। আগামী ২৫ জুন যান চলাচলের জন্য পদ্মা সেতু উন্মক্ত করে দেয়া হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তাই কালনা সেতুর কাজও দ্রুত সম্পন্ন করতে চলছে অবিরাম কর্মযজ্ঞবাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে মধুমতি নদীর উপর কালনা সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। জাপানের টেককেন করপোরেশন ও ওয়াইবিসি এবং বাংলাদেশের আবদুল মোনেম লিমিটেড যৌথভাবে এ সেতুর ঠিকাদার। সেতুর পূর্ব পাড়ে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলা এবং পশ্চিম পাড়ে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা। প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, ছয় লেনের এ সেতু হবে এশিয়ান হাইওয়ের অংশ। চারটি মূল লেনে দ্রুতগতির ও দুটি লেনে কম গতির যানবাহন চলাচল করবে। সেতুর দৈর্ঘ্য হবে ৬৯০ মিটার এবং প্রস্থ ২৭ দশমিক ১০ মিটার। বর্ষায় পানি থেকে সেতুর উচ্চতা ৭ দশমিক ৬২ মিটার এবং নদীর মাঝ খানে সেতুতে যান চলাচলের জন্য ১৫০ মিটার ফাঁকা থাকছে। উভয় পাশে সংযোগ সড়ক হবে ৪ দশমিক ২৭৩ কিলোমিটার, যার প্রস্থ ৩০ দশমিক ৫০ মিটার। সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় হবে ৯৫৯ দশমিক ৮৫ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের ২৪ জুন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সেতু কর্তৃপক্ষের কার্যাদেশ চুক্তি স্বাক্ষর হয়। ওই সালের ৫ সেপ্টেম্বর কার্যাদেশ দেয়া হয়। সওজ ও পরিবহন সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্তত ১০টি জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হবে। এটি এই এলাকার মানুষের স্বপ্নের সেতু। এ সেতু চালু হলে নড়াইল, যশোর, বেনাপোল স্থলবন্দর ও খুলনা থেকে ঢাকায় যাতায়াতকারী পরিবহন মাগুরা-ফরিদপুর হয়ে যাতায়াতের পরিবর্তে কালনা হয়ে যাতায়াত করতে পারবে। এতে বেনাপোল-ঢাকা ও যশোর-ঢাকার দূরত্ব ১১৩ কিলোমিটার, খুলনা-ঢাকার দূরত্ব ১২১ কিলোমিটার এবং নড়াইল-ঢাকার দূরত্ব ১৮১ কিলোমিটার কমবে। একই ভাবে ঢাকার সঙ্গে শিল্প ও বাণিজ্যিক শহর ওয়াপাড়া, বেনাপোল স্থল বন্দর ও মোংলা বন্দর, সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্য জেলার দূরত্বও কমে যাবে। নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা চেয়ারম্যান সিকদার আব্দুল হান্নান রুনু বলেন, নড়াইল জেলা একটি কৃষি প্রধান জেলা কালনা সেতু চালু হলে আমাদের এ আঞ্চলের মানুষের জীবন মান এবং অনৈতিক উন্নয়ন হবে। সল্প সময়ে আমরা মালামাল পরিবহন করে ঢাকায় যেতে পারব। দেশের বৃহত্তর স্থল বন্দর বেনাপোল দিয়ে মালামাল আমদানি-রপ্তানিতে সুবিধা হবে। পদ্মাসেতুর সেতুর সাথে কালনা সেতু করায় নড়াইলবাসীর দির্ঘদিনের স্বপ্ন পুরন করছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। কালনা সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও নড়াইল সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুজ্জামান বলেন, কালনা সেতুর কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। ইতিমধ্যে কাজের ৮৮ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। যতদ্রুত সম্ভবর কাজ শেষ কওে জনসাধারনের জন্য সেতু উন্মুক্ত করা হবে বলেও জানান তিনি। প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের ১৯ ডিসেম্বর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নড়াইলের সুলতান মঞ্চে নির্বাচনী জনসভায় কালনা সেতু নির্মাণের অঙ্গীকার করেছিলেন। একনেক সভায় ২০১৪ সালের ১৯ জানুয়ারি মধুমতি নদীর ওপর কালনা সেতু প্রকল্পটি অনুমোদন করেন।


More News Of This Category