কলম্বো, (এবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ ২৪.কম ) : আগামী অক্টোবরে নিজ মাটিতে অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপকে সামনে রেখে স্বাগতিক শ্রীলংকার বিপক্ষে নিজেদের প্রস্তুতি শুরু করছে অস্ট্রেলিয়া। আগামীকাল থেকে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করছে দু’দল। এই সিরিজ দিয়েই নিজেদের প্রস্তুতি মিশন শুরু করার লক্ষ্য তাদের। কলম্বোতে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি শুরু হবে সন্ধ্যা বাংলাদেশ সময় ৭টা ৩০ মিনিটে। কঠিন সংকটের মুখে দিন পার করছে শ্রীলংকা। গত মার্চ থেকে খাদ্য দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ-জ¦ালানি ও ওষুধের সংকটের কারনে ভয়াবহ অবস্থা শ্রীলংকায়। এ অবস্থাতেই দ্বিপাক্ষীক সিরিজ আয়োজনে করছে শ্রীলংকা ক্রিকেট বোর্ড (এসএলসি)। গেল মাসে বাংলাদেশ সফরও করে গেছে তারা। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে টাইগারদের ১-০ ব্যবধানে হারায় শ্রীলংকা। ভয়াবহ পরিস্থিতির মাঝেও, ক্রিকেটারদের সাফল্যে মুখে হাসি ফুটে শ্রীলংকার জনগনের। ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে ভালো পারফরমেন্সের জন্য মুখিয়ে আছে দলটি। এবার অসিদের বিপক্ষে ৩টি টি-টোয়েন্টি, পাঁচটি ওয়ানডে ও দু’টি টেস্ট খেলবে অস্ট্রেলিয়া। তবে টি-টোয়েন্টি সিরিজটি বিশ^কাপের প্রস্তুতির মঞ্চ শ্রীলংকার জন্য। এই প্রস্তুতির সুযোগটা ভালোভাবে সাড়তে চান লংকান অধিনায়ক দাসুন শানাকা। তিনি বলেন, ‘আগামী বিশ^কাপ শুরুর আগে তিন মাসের বেশি সময় আছে। তবে প্রস্তুতিটা এখন থেকেই নিতে হবে। বিশ^কাপের আগে যতগুলো টি-টোয়েন্টি ম্যাচ আছে, সবগুলোই গুরুত্বপূর্ণ। তাই এ ম্যাচগুলোতে ভালো পারফরমেন্স করে নিজেদের প্রস্তুতিটা সাড়তে হবে আমাদের।’ সর্বশেষ দুই দ্বিপাক্ষীক সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জিততে পারেনি শ্রীলংকা। দু’বারই অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে খেলেছিলো তারা। ২০১৭ সালে সর্বশেষ সিরিজ জিতেছিলো লংকানরা। সেটিও ছিলো অসিদের মাটিতে। আর ঘরের মাঠে সর্বশেষ ২০১১ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে শ্রীলংকা। তাই দীর্ঘদিন পর অসিদের বিপক্ষে ঘরের মাঠে সিরিজ জিততে চায় লংকানরা। শানাকা বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া বিশ^ চ্যাম্পিয়ন। যেকোন কন্ডিশনে কঠিন প্রতিপক্ষ। অসিদের বিপক্ষে জিততে হলে, নিজেদের সেরাটাই দিতে। তাই সিরিজটি অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং হতে যাচ্ছে।’ অন্য দিকে সিরিজ জয়ের পাশাপাশি, ভালো ক্রিকেট খেলার লক্ষ্য অস্ট্রেলিয়ার। কারন শ্রীলংকার এই কঠিন সময়ে সেখানকার জনগনের মুখে হাসি ফোটাতে চায় অসিরা। শ্রীলংকার মাটিতে পা দিয়ে তেমনটাই বলেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা এখানে ক্রিকেট খেলতে এসেছি এবং আশা করি, শ্রীলংকার মানুষকে কিছু আনন্দ ও বিনোদন দিতে পারবো।’ তবে সিরিজ জিততে হলে ভালো ক্রিকেট খেলা ছাড়া অন্য কোন পথ নেই বলে জানান ফিঞ্চ। তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য সিরিজ জয়। নিজেদের কন্ডিশনে শ্রীলংকা কঠিন প্রতিপক্ষ। তাদের হারানোটা সহজ হবে না। আমাদের তিন বিভাগেই ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে।’ শ্রীলংকার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে বিশ্রাম দেয়া হয়েছে প্যাট কামিন্স। পিতৃত্বকালীন ছুটির কারণে টি-টোয়েন্টিসহ পুরো সফরেই থাকছেন না স্পিনার এডাম জাম্পা। টি-টোয়েন্টি সিরিজে শ্রীলংকা দলে ফিরেছেন বাঁ-হাতি ব্যাটার ভানুকা রাজাপক্ষে এবং অলরাউন্ডার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। এ ছাড়া দলে সুযোগ পেয়েছেন নতুন মুখ অনুর্ধ্ব-১৯ দলের পেসার মাথিশা পাথিরানা। দল থেকে বাদ পড়েন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা এবং লাহিরু কুমারা। গেল বছর সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাটিতে হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো অস্ট্রেলিয়া। ঐ বিশ^কাপের পর ঘরের মাঠে শ্রীলংকার বিপক্ষে ৫ ম্যাচের সিরিজ ও পাকিস্তানের মাটিতে এক ম্যাচের সিরিজ জিতেছে অসিরা। আর বিশ^কাপের পর অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের কাছে সিরিজ হারে লংকানরা। এখন পর্যন্ত ২২টি টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হয়েছে শ্রীলংকা ও অস্ট্রেলিয়া। লংকানদের জয়টি ৯টিতে, অস্ট্রেলিয়ার ১২টিতে। ১টি ম্যাচ টাই হয়। শ্রীলংকা দল : দাসুন শানাকা (অধিনায়ক), পাথুম নিশাঙ্কা, দানুস্কা গুনাতিলকা, কুসল মেন্ডিজ, চারিথ আশালঙ্কা, ভানুকা রাজাপক্ষে, নুয়ান্দু ফার্নান্দো, লাহিরু মাধুশঙ্কা, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, চামিকা করুনারতেœ, দুশমন্ত চামিরা, কাসুন রাজিথা, নুয়ান তুসারা, মাথিশা পাথিরানা, রমেশ মেন্ডিজ, মহিশ থিকসানা, প্রবীন জয়াবিক্রমা ও লক্ষন সান্দাকান। অস্ট্রেলিয়ার দল : অ্যারন ফিঞ্চ (অধিনায়ক), শন অ্যাবট, ঝাই রিচার্ডসন, কেন রিচার্ডসন, স্টিভেন স্মিথ, অ্যাস্টন আগার, জশ হ্যাজেলউড, জশ ইংলিস, মিচেল মার্চ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মিচেল স্টার্ক, মার্কাস স্টয়নিস, মিচেল সোয়েপসন, ডেভিড ওয়ার্নার ও ম্যাথু ওয়েড।