সিলেট,(এবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ ২৪.কম ) : সিলেট জেলা ও মহানগরীতে আগামী ১২ থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল ক্যাম্পেইন ২০২২ অনুষ্ঠিত হবে।
এবার ৩ লক্ষ, ৮৩ হাজার ৯৬৩ জন শিশুকে টিকা খাওয়ানোর লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিবার এ ক্যাম্পেইন ১ দিন ব্যাপী থাকলেও এবার ৪ দিন ব্যাপী করা হচ্ছে। এতে জেলায় ৬-১১ মাস বয়সী শিশুকে নীল ক্যাপসুল (১ লক্ষ ইউনিট) ও ১২-৫৯ মাস বয়সী শিশুদের জন্য লাল ক্যাপসুল (২ লক্ষ ইউনিট) খাওয়ানো হবে। এছাড়া সিলেট মহনগরীতে ৬-১১ মাস বয়সী শিশুকে নীল ক্যাপসুল ( ৮ হাজার ৮১২ ইউনিট) ও ১২-৫৯ মাস বয়সী শিশুদেরকে লাল ক্যাপসুল (৭৫ হাজার ১৫১ ইউনিট) খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেট সিভিল সার্জন কার্য্যালয় ও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সভা কক্ষে পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত সাংবাদিকদের অবহিতকরণ সভায় এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। সিলেট সিটি কর্পোরেশন আয়োজিত সভায় বক্তব্য রাখেন সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম।
সিলেট সিভিল সার্জন কার্যালয় আয়োজিত সভায় বক্তব্য রাখেন ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা.জন্মেয়জয় দত্ত, এ সময় সিলেট সিভিল সার্জন কার্য্যালয়ের সিনিয়র স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সুজন বনিক, মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. স্বপ্নিল সৌরভ রায় ও অন্যান্য কর্মকর্তাগন উপস্থিত ছিলেন।
সভায় জানানো হয়, আগামী ১২-১৫ জুন দেশব্যাপী ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন উদযাপিত হতে যাচ্ছে। এবার কোভিড-১৯ মহামারীর প্রেক্ষাপটে ভিন্নভাবে এ ক্যাম্পেইন আয়োজিত হতে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে সিলেট জেলা ও মহানগরীতে সবধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। এ বছর কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে আসন্ন ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন, প্রস্তুতি ও ক্যাম্পেইন সংক্রান্ত অন্যান্য কার্যক্রম যথাযথভাবে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে সম্পন্ন করার নিমিত্তে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সকলকে স্বাস্থ্যকর্মীদের হাতের ও ব্যবহৃত সরঞ্জামের পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা, শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করা, পর্যাপ্ত মাস্ক সরবরাহ করা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। সভায় আরও জানানো হয় যে, শিশুর সুস্থভাবে বেঁচে থাকা, স্বাভাবিক বৃদ্ধি, দৃষ্টিশক্তি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন ‘এ’ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুপুষ্টি। ভিটামিন এ-এর অভাবে রাতকানা থেকে শুরু করে জেরোপথ্যালমিয়ার মতো রোগ হতে পারে যাতে চোখের দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণ লোপ পেতে পারে। এছাড়া ভিটামিন এ-এর অভাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, ডায়রিয়ার ব্যাপ্তিকাল বৃদ্ধি পায়, রক্তাল্পতা দেখা দেয় ও ত্বকের শুষ্কতা বৃদ্ধি পায়।
যেহেতু ভিটামিন ‘এ’র অভাব একটি জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সমস্যা তাই সম্পূরক খাদ্য হিসেবে বছরে দুইবার জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। কোভিড-১৯ প্রেক্ষাপটে ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন-এর গুরুত্ব আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ ভিটামিন এ প্লাস ক্যাপসুল খেলে কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। এছাড়া জন্মের পরপরই নবজাতককে শাল দুধ খাওয়ানো, জন্মের পর প্রথম ৬ মাস শিশুকে শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়ানো শিশুর ৬ মাস পূর্ণ হলে বুকের দুধের পাশাপাশি ঘরে তৈরি অন্যান্য সুষম খাবার খাওয়ানো, গর্ভবর্তী ও প্রসূতি মায়েদের স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ভিটামিন এ সমৃদ্ধ সবুজ শাক সবজি ও হলুদ ফল মূল খাওয়ানো এবং রান্নায় ভিটামিন এ সমৃদ্ধ ভোজ্য তেল ব্যবহার করা- এ সকল পুষ্টি বার্তা ও প্রদান করা হবে। এ লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় সিলেট সিভিল সার্জন অফিসের ইপিআই ভবনে সিভিল সার্জনের সভাপতিত্বে জেলার অন্যান্য বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে এক অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ইতিমধ্যে সিলেট জেলার সকল উপজেলার তদারককারি মাঠকর্মী ও স্বেচ্ছাসবীগণকে প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। এতে জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন সফল করতে সকল মহলের সহযোগিতা কামনা করা হয়।