বার্বাডোজ, (এবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ ২৪.কম) : ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওপেনার কাইল মায়ার্সের সেঞ্চুরি ম্লান করে তৃতীয় ম্যাচ জিতে তিন ওয়ানডে সিরিজ জিতলো নিউজিল্যান্ড।
সিরিজ নির্ধারনী তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫ উইকেটে জয় পায় নিউজিল্যান্ড। এই জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে নেয় কিউইরা। প্রথম ওয়ানডে ৫ উইকেটে জিতেছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বৃষ্টি আইনে ৫০ রানে জয় পেয়েছিলো নিউজিল্যান্ড।
বার্বাডোজে টস জিতে প্রথমে বোলিং করতে নামে নিউজিল্যান্ড। ব্যাট হাতে নেমে দলকে দারুণ সূচনা এনে দেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার শাই হোপ ও মায়ার্স। ৩৪ দশমিক ৫ ওভারে ১৭৩ রানের জুটি গড়েন তারা।
হোপ-মায়ার্সের দৃঢ়তায় ১৫ ওভারে ৫০ ও ২৩ ওভারে ১শ রানের কোটা স্পর্শ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরমধ্যেই ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন মায়ার্স।
৩২তম ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান দেড়শ স্পর্শ করে। আর ৩৩তম ওভারে ওয়ানডেতে ২১তম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান হোপ। এরপর ৩৫তম ওভারের প্রথম বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ১৭তম ম্যাচ খেলতে নামা মায়ার্স। এজন্য ১০৬ বল খেলেন তিনি। এ বছরের জুনে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ওয়ানডেতে প্রথম সেঞ্চুরি করেছিলেন মায়ার্স।
মায়ার্সের সেঞ্চুরি পাওয়ার ওভারেই বিচ্ছিন্ন হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের উদ্বোধনী জুটি। ৫১ রান করা হোপকে শিকার করে নিউজিল্যান্ডকে প্রথম সাফল্য এনে দেন পেসার ট্রেন্ট বোল্ট। পরের ওভারের প্রথম বলে মায়ার্সকে বিদায় দেন লুকি ফার্গুসন। ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ১০০ বলে ৫১ রান করেন হোপ। ১২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১১০ বলে ১০৫ রান করেন মায়ার্স।
দলীয় ১৭৩ রানেই দুই ওপেনারকে হারানোর পর ওয়েস্ট ক্যারিবিয়দের মিডল-অর্ডারে ধ্বস নামান নিউজিল্যান্ডের বোলাররা। তবে ব্যাট হাতে অন্যপ্রান্তে চড়াও ছিলেন অধিনায়ক নিকোলাস পুরান। ছক্কা হাকিয়ে ৩৩ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১১তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন পুরান। নান্দনিক সব বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারিতে সেঞ্চুরির পথেই ছিলেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক।
তবে নাভার্স নাইন্টিতে থামতে হয় পুরানকে। ৪৯তম ওভারের চতুর্থ বলে পুরানকে ৯১ রানে থামিয়ে দেন বোল্ট। ৫৫ বলে ৪টি চার ও ৯টি ছক্কায় ৯১ রান করেন পুরান। ইনিংসের শেষ ওভারে ১৫ ও শেষ বলে ছক্কায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ গিয়ে দাঁড়ায় ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩০১ রানে। শেষদিকে ৬ বলে অপরাজিত ২০ রান করেন আলজারি জোসেফ। নিউজিল্যান্ডের বোল্ট ৩ উইকেট নেন।
৩০২ রানের টার্গেটে শুরুতেই উইকেট হারালেও, দ্বিতীয় উইকেটে মার্টিন গাপটিল ও ডেভন কনওয়ে ৯৫ বলে ৮২ রানের জুটি গড়েন। গাপটিল ও কনওয়ে, দু’জনই হাফ-সেঞ্চুরি তুলে বিদায় নেন। গাপটিল ৫৭ ও কনওয়ে ৫৬ রান তুলেন।
চতুর্থ উইকেটে আবারও বড় জুটি পায় নিউজিল্যান্ড। ১০৩ বলে ১২০ রান তুলে দারুণভাবে নিউজিল্যান্ডকে ম্যাচ জয়ের পথে রাখেন এ ম্যাচের অধিনায়ক টম লাথাম ও ড্যারিল মিচেল।
দলীয় ২৪৮ রান ও ৪২তম ওভারে মিচেলকে শিকার করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন ইয়ানিক কারিয়া ৪৯ বলে ৬৩ রান করেন মিচেল। কিছুক্ষণ বাদে লাথামকে বিদায় দেন জেসন হোল্ডার। ৭৫ বলে ৬৯ রান করেন লাথাম।
মিচেল-লাথামের বিদায়ের পর জয়ের জন্য ৪২ বলে ৪৩ রানের দরকার পড়ে নিউজিল্যান্ডের। ষষ্ঠ উইকেটে ২৩ বলে ঝড়ো গতিতে অবিচ্ছিন্ন ৪৮ রান তুলে নিউজিল্যান্ডের জয় নিশ্চিত করেন মাইকেল ব্রেসওয়েল ও জেমস নিশাম। ১১ বলে ১টি চার ও ৪টি ছক্কায় অপরাজিত ৩৪ রান করেন নিশাম। ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন ব্রেসওয়েল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হোল্ডার-কারিয়া ২টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হন নিউজিল্যান্ডের লাথাম। সিরিজ সেরা হন স্যান্টনার।
সিরিজটি বিশ^কাপ সুপার লিগের অংশ হওয়ায়, এই জয়ে ১২ ম্যাচে ১১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চতুর্থস্থানে উঠে এলো নিউজিল্যান্ড। ২৪ ম্যাচে ৯০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের সপ্তম স্থানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ওয়ানডের আগে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজও ২-১ ব্যবধানে জিতেছিলো নিউজিল্যান্ড।