এ ম্যাচটি চলা অবস্থায় এবং পরে মাঠের ভেতর ও মাঠের বাইরে বেশ কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে।
পাকিস্তান ইনিংসের ১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে বাক-বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েছিলেন পাক ব্যাটার আসিফ আলি ও আফগানিস্তানের ফরিদ আহমাদ।
ফরিদের করা ঐ ওভারের পঞ্চম বলটি বলে হুক করে ছয় মারতে গিয়েছিলেন আসিফ। কিন্তু সেটি আকাশে উঠে যায়। বলটি তালুবন্দি করতে ভুল করেননি আফগানিস্তানের করিম জানত। আসিফ আউট হতেই তার সামনে গিয়ে উল্লাস করেন ফরিদ। তাতেই রেগে যান আসিফ। তিনিও ব্যাট উচিয়ে ফরিদকে মারতে যান। পরে নিজেকে সংযত করেন আসিফ। তবে ডান হাতের কনুই দিয়ে ফরিদের বুকে ধাক্কা দেন আসিফ। পরে অন্য ক্রিকেটারদের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি আর বেশি ঘোলাটে হতে পারেনি।
তবে আসিফের এমন আচরনে তাকে এবারের এশিয়া কাপের বাকি ম্যাচ থেকে নিষিদ্ধের দাবী জানিয়েছেন আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক প্রধান নির্বাহি শফিক স্তানকিজাই।
টুইটারে শফিক লিখেন, ‘এটা আসিফ আলির চরম পর্যায়ের বোকামি এবং তাকে টুর্নামেন্টের বাকি অংশ থেকে নিষিদ্ধ করা হোক। যে কোনও বোলারের উদযাপন করার অধিকার আছে, কিন্তু তাই বলে শারীরিক আগ্রাসন মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।’
অপ্রীতিকর ঘটনা শুধুমাত্র মাঠের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, তা মাঠের বাইরে ছড়িয়েছে। গ্যালারিতে মারামারিতে লিপ্ত হয়েছিলেন পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সমর্থকরা।
গ্যালারির চেয়ার তুলে পাকিস্তানি সমর্থকদের ওপর হামলা করেন আফগানিস্তানের সমর্থকরা। ম্যাচ শুরুর পর থেকেই গ্যালারিতে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। আচরন ও মুখের ভাষায় সেটি সীমাবদ্ধ ছিলো। তবে আসিফ-ফরিদের ঘটনার পর থেকেই ভয়ংকর হয়ে উঠে দু’দেশের সমর্থকরা। আর সেটি বড় আকারে রুপ নেয় ম্যাচ শেষে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায় ম্যাচ শেষে, গ্যালারির চেয়ার তুলে পাকিস্তানি সমর্থকদের দিকে ছুঁড়ে মারেন আফগান সমর্থকরা। অনেক পাকিস্তানিকে চেয়ার দিয়ে পিঠে আঘাত করে আফগানরা। জলের বোতল ছুঁড়ে মারে পাকিস্তানীরা। পরে দেখা যায় আক্রমণাত্মক হয়ে উঠে পাকিস্তানের সমর্থকরা। গ্যালারিতে বেশ কিছুক্ষণ এমন অবস্থা বিরাজ করেছে। পরে আইন শৃৃঙ্খলাবাহিনী দু’দশের সমর্থকদের সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।
তবে আফগানিস্তানের সমর্থকদের উপর ক্ষেপেছেন পাকিস্তানের সাবেক পেসার শোয়েব আকতার। ম্যাচের পর নিজের ইউটিউব চ্যানেলে আফগানদের সমর্থকদের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে আকতার বলেন, ‘আফগানিস্তান যখন কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গিয়েছে, তখন গোটা পাকিস্তান তাদের পাশে ছিলো। এই তার প্রতিদান! আসিফ আলি আউট হওয়ার পরে যা হল, সেটা তাদের কি ধরনের আচরণ ছিলো। আসিফকে ধাক্কা মারা হল, গালিগালাজ করা হল।’
তিনি আরও বলেন, ‘তোমরা ক্রিকেট খেলতে এসেছ, সেটা খেলো। তার জন্য আবেগ থাকা ভাল। কিন্তু অসভ্যতা ভাল নয়। এই জন্যই ঈশ্বর তোমাদের সাজা দিয়েছে। এই জন্যই একজন পাঠান ছক্কা মেরে তোমাদের হারিয়ে দিল। তোমাদের কাঁদতে হল।’
আকতারের বক্তব্যের পর আবারও টুইট করেন আফগানিস্তানের শফিক। তিনি লিখেন, ‘দর্শকদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। খেলার মাঠে এই ধরনের ঘটনা এর আগেও অনেক বার ঘটেছে। কবির খান, ইনজামাম ভাই ও রশিদ লতিফকে জিজ্ঞাসা করে দেখুন, আমরা তাদের কিভাবে আপ্যায়ণ করেছি। আপনাকে একটা পরামর্শ দিই। এরপর থেকে কোনও দিন খেলার মধ্যে দেশকে টেনে আনবেন না।’