হাইফা (ইসরায়েল), (এবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ ২৪.কম) : চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফুটবলে স্বাগতিক ইসরায়েলের ক্লাব মাকাবি হাইফার বিপক্ষে শুরুতে পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত জয় পেয়েছে প্যারিস জায়ান্ট প্যারিস সেন্ট জার্মেই(পিএসজি)। লিওনেল মেসি, কিলিয়ান এমবাপ্পে ও নেইমারের গোলে গতরাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৩-১ ব্যবধানে জয়ী হয়েছে পিএসজি। এর মাধ্যমে গ্রুপ পর্বে দুই ম্যাচে শতভাগ জয় তুলে নিল প্যারিসের জায়ান্টরা।
ম্যাচের প্রথম দিকে জারোন চেরির গোলে হাইফা এগিয়ে গিয়ে বিস্ময় সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু বিরতির আগে মেসির গোলে সমতায় ফেরায় পিএসজি। এ নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টানা ১৮টি মৌসুমে গোল করার কৃতিত্ব দেখালেন এই আর্জেন্টাইন সুপারস্টার। দ্বিতীয়ার্ধে স্বাগতিকদের উপর চেপে বসে পিএসজি। তারই ধারাবাহিকতায় একে একে এমবাপ্পে ও নেইমারের গোলে সফরকারীদের জয় নিশ্চিত হয়।
ম্যাচ শেষে এমবাপ্পে বলেছেন, ‘আমাদের আরো উন্নতি করতে হবে, এজন্য পরিশ্রমের বিকল্প নেই। আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু সেটা আমাদের ফলাফলে প্রতিফলিত হতে হবে। কারন আন্তর্জাতিক বিরতি ও বিশ্বকাপের পর সবকিছু দ্রুত পাল্টে যাবে। তখন নিজেদের মানিয়ে নেয়াটাও সহজ হবে না।’
দিনের আরেক ম্যাচে জুভেন্টাসকে ২-১ গোলে পরাজিত করেছে বেনফিকা। এ নিয়ে বেনফিকাও দুই ম্যাচে দুই জয় নিশ্চিত করলো। এইচ-গ্রুপে বেনফিকাকে গোল ব্যবধানে পিছনে ফেলে শীর্ষে অবস্থান করছে পিএসজি।
হাইফার সামি ওফার স্টেডিয়ামে শুরু থেকেই পিএসজির আগোছালো রক্ষনভাগে সুবিধা কাজে লাগাতে মরিয়া হয়ে উঠে স্বাগতিকরা। কিন্তু লিগ ওয়ানের জায়ান্টরা যথারীতি কালও আক্রমনভাগের তিন তারকার সুবাদে পরীক্ষায় উতরে গেছে। এমবাপ্পে আরো বলেন, ‘আমাদের তিনজনের একটি বিষয় হলো যেকোন সময় আমরা ম্যাচের পরিস্থিতি পাল্টে দেবার ক্ষমতা রাখি, এটা আমাদের দলের অনেক বড় একটি সুবিধা। আশা করছি এভাবেই আমরা নিজেদের এগিয়ে নিতে যেতে পারবো, দলের জয়ে ভূমিকা রাখতে পারবো।’
এখনো পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জিততে পারেনি প্যারিসের জায়ান্টরা। বেনফিকার বিপক্ষে পরবর্তী দুটি হোম এন্ড এ্যাওয়ে ম্যাচে জয়ী হতে পারলেই নক আউট পর্ব নিশ্চিত হবে। পিএসজি কোচ ক্রিস্টোফে গাল্টিয়ার বলেছেন, ‘দারুন এক পরিবেশে তারা আমাদের চাপে ফেলেছিল। আমরা শুরুতে খুব একটা গোছালো ছিলাম না। তার উপর এক গোল হজম করে আমরা ম্যাচটিকে আরো বেশী কঠিন করে তুলেছিলাম। আমাদের এর থেকে বেরিয়ে আসার প্রয়োজন ছিল। বিরতির পর আমরা ছন্দ ফিরে পেয়ে নিজেদের স্বাভাবিক খেলা খেলেছি।’
অথচ মাত্র ৭০ সেকেন্ডের মধ্যে পিএসজি এগিয়ে যাবার সুযোগ পেয়েছিল। এমবাপ্পে স্বাগতিক গোলরক্ষক জোস কোহেনকে একা পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি। এরপর হাইফা রক্ষনভাগকে ফাঁকি দিয়ে আরো একটি প্রচেষ্টা চালালেও তাতেও সফল হতে পারেননি এমবাপ্পে। ২৪ মিনিটে ডোলেখ হাজিজার ক্রসে সুরিনাম জাতীয় দলের মিডফিল্ডার চেরি ভলির সাহায্যে স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন। কিছুক্ষন পরেই ব্যবধান দ্বিগুন করার সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি হাইফা। ফ্র্যান্টজি পিয়েরটের বল জালে জড়ালেও অফসাইডের কারনে তা বাতিল হয়ে যায়। বিরতির আট মিনিট আগে পিএসজি সমতায় ফিরে। এমবাপ্পের লো ক্রসে মেসি পোস্টের খুব কাছে থেকে কোহেনকে পরাস্ত করেন।
দ্বিতীয়ার্ধে চেরির দুর পাল্লা একটি জোড়ালো শট উড়ন্ত গতিতে রক্ষা করেন গিয়ানলুইগি ডোনারুমা। বিরতির পর পিএসজি শুরুতে কিছুটা আগোছালো থাকলেও ধীরে ধীরে ম্যাচের নিয়ন্ত্রন নিজেদের করে নেয়। ৬৫ মিনিটে কোহেনের একটি লো শট দারুনভাবে রুখে দেন মেসি। ৬৯ মিনিটে প্রথমবারের মত ম্যাচে এগিয়ে যায় ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা। মেসির পাস থেকে এমবাপ্পে গোল করে পিএসজিকে এগিয়ে দেন। এক গোলে পিছিয়ে থেকে গোলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে হাইফা। চেরির ফ্রি-কিক অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। কিন্তু পিএসজিও ছেড়ে কথা বলেনি। নেইমারের কোনাকুনি শটে শেষ পর্যন্ত ৮৮ মিনিটে পিএসজির স্বস্তিদায়ক জয় নিশ্চিত হয়।