,

লুকাকুর একমাত্র গোলে পোর্তোকে পরাজিত করেছে ইন্টার

মিলান, (এবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ ২৪.কম/এএফপি) : রোমেলু লুকাকুর একমাত্র গোলে পোর্তোকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলর ম্যাচে পরাজিত করেছে ইন্টার মিলান। এই জয়ে এক দশকেরও বেশী সময় পর প্রথমবারের মত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার স্বপ্ন পূরনের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেছে ইতালিয়ান জায়ান্টরা।
সান সিরোতে ম্যাচ শেষের চার মিনিটর আগে জয়সূচক গোলটি করেন বেলজিয়ান ফরোয়ার্ড লুকাকু । নিজের  হেডের ফিরতি বলে তিনি বল জালে জড়ালে ইন্টারের জয় নিশ্চিত হয়। সিমোনে ইনজাগির দল আগামী মাসে ফিরতি ম্যাচ খেলতে পর্তুগাল সফরে যাবে। দ্বিতীয় ম্যাচ খেলার আগে কিছুটা হলেও এগিয়ে থাকলো ইন্টার।
২৯ বছর বয়সী লুকাকু পুরো মৌসুম জুড়েই ইনজুরির সাথে লড়াই করে যাচ্ছেন। আগস্টের পর প্রথমবারের মত গত সপ্তাহে লিগে গোল করেছেন। গতকাল দ্বিতীয়ার্ধে বদলী বেঞ্চ থেকে উঠে এসে ইন্টারকে গোল উপহার দেন। ২০১১ সালের পর প্রথমবারের মত কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার আত্মবিশ^াসও এই গোলের মাধ্যমে আদায় করে নিয়েছে ইন্টার।
ম্যাচ শেষে লুকাকু বলেছেন, ‘জয় পাওয়াটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ইন্টারের জন্য সর্বোচ্চ সেরাটা দিতে  আমি চেষ্টা করছি। এই জয়ে আমি দারুন খুশী। আশা করছি এই ধারা বজায় রাখতে পারবো।’
৭৮ মিনিটে দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ন মিডফিল্ডার ওটাভিও দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠের বাইরে চলে গেলে বাকি সময়টা  কোচ সার্জিও কনসেইকাওর পোর্তোকে ১০জন নিয়ে খেলতে হয়েছে। চলতি মাসে এটাই ওটাভিওর প্রথম মূল একাদশের ম্যাচ ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে পর্তুগীজ চ্যাম্পিয়নরা ইতালিয়ান দলগুলোর সাথে সমান তালে লড়াই করছে। এর আগে জুভেন্টাস ও রোমার মত সিরি-এ’র শীর্ষ দলগুলোকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নক আউট পর্বে বিদায় করার পর এবার তাদের সামনে ইন্টারকে বিদায় করার সুযোগ।
ইন্টার বস ইনজাগি বলেছেন, ‘শারিরীকভাবে দক্ষ একটি দলের বিপক্ষে আমরা কিছুটা হলেও এগিয়ে থাকলাম, যা আমাদের আত্মবিশ^াস যোগাচ্ছে।  শেষ ষোল ও কোয়ার্টার ফাইনাল নিয়মিত খেলার অভ্যাসে পনিত হয়েছে পোর্তোর।  আজ আমরা মাঠে যেভাবে খেলেছি তাতে জয়টা প্রাপ্য ছিল। কিন্তু আমরা জানি এখানেই শেষ নয়। দ্বিতীয় লেগে পোর্তোর মাঠে গোল করাটা কঠিন হবে।’
১৩ মিনিটে ফেডেরিকো ডিমারকোর ডিপ ক্রস থেকে আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার লটারো মার্টিনেজের হেড বারে না লাগলে তখনই হয়তো এগিয়ে যেত ইন্টার। পাঁচ মিনিট পর হাকান কালহানগ্লুর শট দারুন দক্ষতায় রুখে দেন পোর্তো গোলরক্ষক দিয়োগো কস্তা। ৩৭ মিনিটে ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগ হাতছাড়া করে পোর্তো। ওটাভিওর পাস থেকে মেহদি টারমির নির্খঁত লেঅফ মার্কো গ্রুজিচ পেয়ে তা বাড়িয়ে দেন ওয়ান্ডারসন গালেনোর দিকে। কিন্তু গালেনোর হেড পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। ডিমারকোর ইনসুইং ফ্রি-কিক থেকে আলেসান্দ্রো বাস্তোনির হেড আবারো দারুন ভাবে রুখে দিয়ে কস্তা বিরতির আগে পোর্তোকে রক্ষা করেছেন।
নিকোলো বারেলার ফ্লিক ব্যর্থ হওয়ায় আবারো রক্ষা পায় পোর্তো। বিরতির পরপরই দুটি সুযোগ হাতছাড়া করে পোর্তো। ৫৪ মিনিটে টারেমির শট সহজেই রুখে দেন আন্দ্রে ওনানা। তিন মিনিট পর ওনানা পরপর দুটি সেভ করে পোর্তোকে হতাশ করেন। জাইডুর লো শট ব্লক করেন মিলান স্ক্রিনিয়ার। পোর্তোর লেফট-ব্যাত জাইডুর দ্বিতীয় শটটি ওনানা রুখে দেন। ম্যাচ শেষে পোর্তো কোচ কনসেইকাও বলেছেন, ‘আমরা বেশ কিছু সুযোগ হাতছাড়া করেছি। দ্বিতীয়ার্ধে অনেকগুলো সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারিনি। আমাদের আরো বেশী আগ্রাসী হওয়া উচিৎ ছিল। ইন্টার ভাল খেলেছে। কিন্তু ম্যাচের শেষভাগে আমরাই বেশী সুযোগ পেয়েছি। আমি মনে করি আজকের ফলাফলটা ভিন্ন হওয়া উচিৎ ছিল।’
৭২ মিনিটে অনেকটাই নিষ্প্রভ এডেন জেকোর বদলী হিসেবে মাঠে নামেন লুকাকু। মাঠে নেমেই লুকাকুর লো ক্রসে মাত্র ছয় গজ দুর থেকে বল জড়াতে ব্যর্থ হন মার্টিনেজ। ম্যাচটি যখন নিশ্চিতভাবে গোলশুন্য ড্রয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল তখন ওটাভিওর লাল কার্ডে কপাল খুলে ইন্টারের। নিকোলের বারেলার ক্রসে লুকাকুর হেড আটকানোর সাধ্য ছিল না দিয়োগো কস্তার।


More News Of This Category