নড়াইল, (এবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ ২৪ ডটকম): হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের পুণলগ্ন শুভ মহালয়া আজ বুধবার। মহালয়ার দিন হচ্ছে দুর্গা দেবীর আগমনী উৎসব। দুর্গাপূজার একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ মহালয়া। এদিন থেকেই দুর্গাপূজার দিন গণনা শুরু হয়। পূজার বাকি আর মাত্র এক সপ্তাহ।আগমী ৯ অক্টোবর দেবীর বোধন ও ষষ্ঠীপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যদিয়ে চারদিনের শারদীয়া দুর্গাপূজা শুরু হবে। ১০ অক্টোবর সপ্তমী, ১১ অক্টোবর অষ্টমী পূজা অনুষ্ঠিত হবে। ১২ অক্টোবর একই দিনে নবমী ও দশমী পূজা অনুষ্ঠিত হবে। তাই প্রতিমায় শেষ তুলির আঁচড়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন শিল্পীরা। রং তুলির আঁচড়ে তাদের হাতে ফুটে উঠছে প্রতিমার মুখমন্ডল। আবার কেউ আঁকছেন চুল, কেউ চোখের পাতা, কারও তুলির নিপুণ ছোঁয়ায় ফুটে উঠছে চোখ। দিন-রাত পালা করে চলছে এ কাজ। দম ফেলার ফুসরত নেই শিল্পীদের। প্রতিটি মণ্ডপে চলছে সাজসজ্জার কাজ। পাশাপাশি মণ্ডপগুলোর সৌন্দর্যবর্ধন ও আলোকসজ্জার কাজও চলছে একসঙ্গে।জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট পংকজ বিহারী ঘোষ অন্ন জানান, চলতি বছর জেলার ৩ উপজেলায় ৫৬২টি মণ্ডপে জাঁকজমকপূর্ণ পরিবেশে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে নড়াইল সদর উপজেলায় ২৪৪টি মণ্ডপে, কালিয়া উপজেলায় ১৬৭টি মণ্ডপে এবং লোহাগড়া উপজেলায় ১৫১টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপনের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পুলিশ ও জেলা প্রশাসন উল্লেখ করে পংকজ বিহারী ঘোষ বলেন, ‘জেলা প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি মন্দিরে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। এ ব্যাপারে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও আনসার সদস্যরা কাজ করবেন। মন্ডপগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগাতে বলেছি আমরা। এখানের বর্তমান অবস্থা স্বাভাবিক। সবকিছু ঠিক আছে। তাই মণ্ডপের নিরাপত্তা নিয়ে আমাদের মাঝে কোনও শঙ্কা নেই। দুর্গাপূজা সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। এ উৎসবে হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবাই অংশ নেয় বলে জানান তিনি।নড়াইলের পুলিশ সুপার কাজী এহসানুল কবীর বাসসকে বলেন, ‘এ বছর মণ্ডপগুলোতে পূজার আগে ও চলাকালে এবং পরে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। প্রতিটি মণ্ডপে নারী-পুরুষ আনসার সদস্য সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন। গুরুত্বপূর্ণ মণ্ডপে পুলিশ মোতায়েন থাকবে। এ ছাড়া সেনাসদস্য, র্যাব, পুলিশ ভ্রাম্যমাণভাবে দায়িত্ব পালন করবে। থাকবে গোয়েন্দা নজরদারি। যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ তৎপর থাকবে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে শারদীয় দুর্গোৎসব পালিত হবে।’জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার জাহান জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি মন্ডপের জন্য ৫০০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শারদীয় দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে কেউ বিঘ্ন সৃষ্টি কিংবা অপতৎপরতা চালানোর চেষ্টা করলে তাকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেয়া হবে। দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে প্রশাসন তৎপর রয়েছে। সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি পূজা উৎযাপন পরিষদের পক্ষ থেকেও প্রতিটি মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবী কর্মীরা কাজ করবেন। আশা করছি, কোথাও কোনও ধরনের সমস্যা হবে না।