চট্টগ্রাম, (এবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ ২৪.কম): পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার রাবার ও রাবার-ভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও প্রসারে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় দেশের রাবার শিল্প এগিয়ে যাচ্ছে। জাতীয় অর্থনীতিতে রাবার শিল্পের অবদান উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশে উৎপাদিত উন্নত মানের রাবার অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট রাবার ও রাবার-ভিত্তিক শিল্পের সম্প্রসারণ ও বিকাশের লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের গবেষণা কার্যক্রম সফলভাবে সম্পাদন করেছে। এ খাতের উন্নয়ন হলে দরিদ্র জনগোষ্ঠী উপকৃত হবে এবং বেকার সমস্যা সমাধানে ভূমিকা পালন করবে।
চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়াম মাঠে বাংলাদেশ রাবার বোর্ডের আয়োজনে আজ প্রথম প্রাকৃতিক রাবার ও রাবার-ভিত্তিক শিল্পপণ্য মেলা, ২০২২ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
রাবার বোর্ডের চেয়ারম্যান সৈয়দা সারওয়ার জাহানের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন, বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিটের পরিচালক ড. রফিকুল হায়দার এবং এফবিসিসিআই পরিচালক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশন প্রায় ৪০ হাজার একর জমিতে ১৮ টি রাবার বাগান সৃজন করেছে। বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করতে পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকারি ৩৩ হাজার একর জমি রাবার চাষের জন্য লিজ দেয়া হয়েছে। খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটিসহ দেশের ১২টি জেলায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ১৩ হাজার ২শত একর জমিতে রাবার চাষের উন্নয়নের জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে কাজ করছে রাবার বোর্ড। রাবার চাষের সাথে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারগণকে সংগঠিত হয়ে এ খাতটির উন্নয়নে আন্তরিকভাবে কাজ করার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
শাহাব উদ্দিন বলেন, রাবার বোর্ড বাগান মালিক, ম্যানেজার ও টেপারদের প্রশিক্ষণ প্রদান, ক্লোন আমদানি, বিদেশের সাথে যৌথ বিনিয়োগের লক্ষ্যে এমওইউ সম্পাদন করেছে। ৩৩ হাজার একর সরকারি জমি ইজারা নেয়া ব্যক্তিদের আন্তরিকতার সাথে রাবার চাষ করার জন্য তিনি আহ্বান জানান। সিনথেটিক রাবার আমদানী না করে দেশীয় প্রাকৃতিক রাবার ব্যবহারের জন্য রাবার-ভিত্তিক শিল্প উদ্যোক্তাদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান। তাতে কার্বন শোষণের পরিমাণ বাড়বে এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা হ্রাস করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অবদান রাখতে সক্ষম হবে। ফলে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবেলায় গ্লোবাল কার্বন ট্রেডিং এবং এনভাইরন্টাল ফান্ড থেকে সহায়তা নেওয়া সম্ভব হবে।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে তাল মিলিয়ে রাবারজাত অধিক পণ্য দেশে উৎপাদনের জন্য শিল্প উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিযোগিতা মূলত বিশ্বের টিকে থাকতে উন্নত মানের রাবার গাছ লাগাতে হবে। তাহলে উৎপাদনের পরিমাণ বেড়ে যাবে, বেকার সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে।
অনুষ্ঠান শেষে মন্ত্রী মেলা ঘুরে দেখেন। মেলায় স্টলে রাবার ও রাবারজাত পণ্য ঘুরে দেখেন। রাবার মেলা ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে।