দিনাজপুর, (এবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ ২৪.কম) : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এম.পি বলেছেন, বর্ণচোরা বিএনপির শ্রদ্ধা শহীদ মিনারে নয়, তাদের শ্রদ্ধা অন্য জায়গায়।
তিনি বলেন, ২০০১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটের ভিত্তি রচনা করেছিলেন। ২০০১ সালে পহেলা অক্টোবর নির্বাচনে জোর করে ক্ষমতায় এসে ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি জামাত জোট আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটের কাজ এক চুল পরিমাণ এগিয়ে নেয় নাই। তারা এর কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিল।
তিনি আরো বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার যে অর্জন সেটি বিএনপি সামনের দিকে এগিয়ে নেয় নাই। তারাই এখন শহিদ মিনারে এসে ভাষা দিবসে মায়াকান্না কাঁদে। এটা আমাদের সব থেকে লজ্জার বিষয়। যারা মাতৃভাষাকে সংরক্ষণ করেনা, মাতৃভাষাকে শ্রদ্ধা জানায় না, যারা মাতৃভাষাকে রাজনৈতিক স্বার্থ হিসেবে ব্যবহার করে- তারাই এখন শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শহিদ মিনারে আসে।
প্রতিমন্ত্রী আজ জেলার বিরল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ‘শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২৩’ উপলক্ষ্যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
বিরল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. আফছানা কাওসারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বিরল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাাফিজুর রহমান বাবু, বিরল পৌরসভার মেয়র সবুজার সিদ্দিক সাগর ও বিরল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রমাকান্ত রায়।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা গর্ব করে বলতে পারি যে যাত্রা আমাদের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুরু করেছিলেন এবং জাতিকে একটি সংগ্রামী জাতিতে পরিণত করেছিলেন এবং অগ্রসরমান জাতি হিসেবে তিনি একটি রূপরেখা দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সেই রূপরেখা আর বাস্তবায়িত হয় নাই। পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী যারা আমার মায়ের ভাষা কেড়ে নিতে চেয়েছিল, যারা আমাদের মা-বোনকে হত্যা নির্যাতন করেছে, বাড়িঘর জ্বালিয়েছে, গণহত্যা চালিয়েছে, তারা পাকিস্তানী ভাবধারায় দেশ পরিচালনা করেছিল এবং বাংলাকে যেন তুলে ধরতে না পারা যায়, সেজন্য যত ধরনের কর্মকান্ড দরকার সেটি তারা করেছিল এবং এই ধারাবাহিকতা শুরু হয়েছিল জিয়াউর রহমানের হাত ধরে, এরশাদের পথ ধরে এবং খালেদা জিয়া একই ধারায় চলেছে। আমরা কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা শহীদদের কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারিনি।
তিনি বলেন, আজকে গর্ব করে বলতে পারি যে- আমরা সেই কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছে গেছি। ভাষার জন্য যারা জীবন দিয়েছেন, সংগ্রাম করেছেন এবং যারা এখনো বেঁচে আছেন- তারা গর্ব করে বলতে পারেন তাদের সংগ্রামের চেতনা পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সমগ্র পৃথিবী তাদের সংগ্রামের কথা জানতে পারছে।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশ স্বাবলম্বী দেশ। আমরা যাদের সাথে যুদ্ধ করে এদেশ স্বাধীন করেছি- সেই পাকিস্তানের বেহাল অবস্থা। সেদেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছে ‘পাকিস্তানান দেউলিয়া হয়ে গেছে।’ এ দেউলিয়া হওয়ার মধ্য দিয়ে প্রমাণ করে আমরা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে এবং ভাষার জন্য যে রক্ত দিয়েছি, সে রক্ত বৃথা যায় নাই। সে রক্ত আজকে সত্য প্রমাণিত হয়েছে।
তিনি বলেন, যারা পাকিস্তানী ভাবধারায় দেশ পরিচালিত করার চেষ্টা করেছিল সেই জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়ার বিএনপি আজকে যদি ক্ষমতায় থাকত- তবে বাংলাদেশ আজকে গর্ব করে দাঁড়াতে পারতনা। বাংলাদেশও পাকিস্তানের মতো আজকে দেউলিয়া রাষ্ট্রে পরিণত হয়ে যেত।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে দেশ আছে বলেই বাংলাদেশ আজকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে, ভাষা শহীদদের চেতনা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর আদর্শে পরিচালিত হচ্ছে বলেই উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পৃথিবীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ একটি উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ হবে।
এর আগে প্রতিমন্ত্রী একুশের প্রথম প্রহরে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে জেলার বোচাগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।