,

বাংলাদেশের প্রতি চীনের প্রতিশ্রুতি অপরিবর্তিত থাকবে: চীনা রাষ্ট্রদূত

ঢাকা, (এবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ ২৪ ডট কম): চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, দেশের অভ্যন্তরে যে কোনো পরিবর্তন সত্ত্বেও বাংলাদেশের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার বিষয়ে বেইজিংয়ের প্রতিশ্রুতি অপরিবর্তিত থাকবে। চীন প্রতিষ্ঠার ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরো, ‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যে পরিবর্তনই ঘটুক না কেন, আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে চীনের প্রতিশ্রুতি অপরিবর্তিত রয়েছে।’
তিনি বলেন, চীন আন্তরিকভাবে আশা করে যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার করবে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখবে, অর্থনৈতিক উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং মানুষের জীবন-জীবিকার উন্নয়ন ঘটাবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশিদের ছাড়া আর কারও দেশটির উন্নয়নের পথ বেছে নেওয়ার অধিকার নেই।’রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগলিক অখ-তার প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান-এই নীতির ভিত্তিতে বাংলাদেশ-চীন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য ও অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ এবং জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দসহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিনও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, একটি জাতি তখনই সমৃদ্ধ হবে যখন তার তরুণরা উন্নতি লাভ করবে। তিনি আরও বলেন, “তরুণরাই সবচেয়ে উদ্যমী এবং স্বপ্নে ভরা। যুবকরাই আশা এবং তারাই হবে ভবিষ্যতের নেতা।”
তিনি বলেন, যুবকরা একটি উল্লেখযোগ্য সময়ে বাস করছে, এবং তাদের স্বপ্ন পূরণের জন্য একটি প্রতিশ্রুতিশীল সম্ভাবনা উপভোগ করছে।তিনি আরো বলেন ‘আমি আশা করি তরুণরা চীন-বাংলাদেশ সহযোগিতায় নিজেদের নিবেদিত এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বন্ধুত্বের মশাল প্রবাহিত করবে,’ ।রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে সহায়তা করার জন্য চীন একতরফাভাবে তার বাজার খুলে দেয়ার এবং বাংলাদেশকে ১০০ শতাংশ করযোগ্য আইটেমের ওপর শূন্য-শুল্ক হার ধার্যের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।এর অর্থ হচ্ছে, আগামী ১ ডিসেম্বর হতে বাংলাদেশ থেকে চীন সিরিয়াল, চিনি, ভোজ্যতেল, রাবার ও রাবার পণ্য, কাঠজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, কাগজ ও কাগজের পণ্য, উল ও সূতা আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এছাড়াও চীন বাংলাদেশ থেকে তাজা আম আমদানি করবে।’ওয়েন বলেন, বন্যা মোকাবেলায়, চীন বাংলাদেশকে উদ্ধার সুবিধা এবং সরঞ্জাম সরবরাহ করবে।অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত দেড় মাসে, চীনা উদ্যোগগুলো আট কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করেছে, যা বাংলাদেশের ভবিষ্যত এবং এরসঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য চীন যে আস্থা রাখে তার গুরুত্ব তুলে ধরে।
এছাড়া সাম্প্রতিক গণআন্দেলনে আহতদের চিকিৎসায় সহায়তা দিতে চীন জাতীয় জরুরি মেডিকেল টিম পাঠিয়েছে বলেও তিনি জানান।
আগামী বছর ‘চীন-বাংলাদেশ জনগণের পরস্পরের মধ্যে বিনিময়ের বছর’ হবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, এ সময় দূতাবাস রাজনৈতিক বিনিময়, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতা, সংস্কৃতি, শিক্ষা, পর্যটন খাত, খেলাধুলা, জনস্বাস্থ্য, যুব, মহিলা, মিডিয়া এবং একাডেমিক বিনিময় খাতে বেশকিছু অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে।সব উদযাপনের লক্ষ্য আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক উন্নত করা, উভয় দেশের জনগণকে, বিশেষ করে তরুণদের আরও সুবিধা প্রদান করা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী বছর চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ তম বার্ষিকী উদযাপিত হবে।রাষ্ট্রদূত বলেন, “চীন আমাদের ঐতিহ্যগত বন্ধুত্বকে দৃঢ় করতে, বন্ধুত্বপূর্ণ আদান-প্রদান এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক সুবিধাজনক সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য উন্মুখ।’অনুষ্ঠানে চীনা সংস্কৃতি এবং বিভিন্ন কোম্পানির প্রদর্শনীসহ ছিল ইউনান ওভারসিজ কালচার অ্যান্ড এডুকেশন সেন্টারসহ চীনের শিল্পীদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।


More News Of This Category